বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এমন এক পর্যায়ে পৌছেছে যেখানে একে নিয়মিত কাজ হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। প্রতিনিয়ত আরো বেশি মানুষ যোগ দিচ্ছে একাজে। ফ্রিল্যান্সিং বলতে অন্য নির্দিস্ট একটি পেশা বুঝায় না। একজন শিক্ষক কিংবা ছাত্র এমনকি একজন ডাক্তারও ফ্রিল্যান্সার হতে পারেন। অন্য পেশা যদি কঠিন হয় তাহলে ফ্রিল্যান্সিং অবশ্যই কঠিন।
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনার কারনে সাধারনভাবে ফ্রিল্যান্সিংকে সহজ মনে করা হয়।বিষয়গুলি তুলে ধরা হচ্ছে নিছেঃ
ফ্রিল্যান্সিং শখ নাঃ ফ্রিল্যান্সিং অন্যান্য পেশার মতই নির্দিস্ট কাজ। শুধুমাত্র শখ করে এখানে ভাল করার সম্ভাবনা নেই। কোন ফ্রিল্যান্সারকে কাজ করতে দেখলে মনে হতেই পারে তিনি মজার কিছু করছেন। কোন কাজ পছন্দ হলে সেদিকে যাচ্ছেন, পছন্দ না হলে ছেড়ে দিচ্ছেন। কখন কাজ করবেন সেটা নিয়ে কেউ খবরদারী করছে না। বাস্তবে ফ্রিল্যান্সারকে তার সমস্ত কাজের হিসেব ঠিকভাবে রাখতে হয় এবং সব কাজই সময়মত শেষ করতে হয়।
একাধিক কর্তৃত্ব মেনে চলাঃ নিয়মিত চাকরীর সময় নির্দিস্ট বসের অধীনে কাজ করতে হয়। ধীর্ঘদিন কাজ করলে একসময় তার পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদির সাথে মানিয়ে নেয়া যায়। ফ্রিল্যান্সিং কাজে সবসময়ই নতুন নতুন ক্লায়েন্টের কাজ করতে হয়। তাদের প্রত্যেকেরই কাজের ধরন, মানষিকতা, পছন্দ-অপছন্দ ভিন্ন। সেকারনে অতিরিক্ত সচেতনতা প্রয়োজন হয়।
দক্ষতাঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজে ভাল করার জন্য অতিরিক্ত দক্ষতা প্রয়োজন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্স গ্রাকি ডিজাইনার হন তাহলে গ্রাফিক ডিজাইনে দক্ষতা থাকতে হবে, ওয়েভ ডিজাইনার হলে ওয়েব ডিজাইনে দক্ষতা তাকতে হবে, প্রোগ্রামার হলে প্রোগ্রামিং এ দক্ষ হতে হবে। কিন্তু একটিমাত্র বিষয়ে দক্ষতা ফ্রিল্যান্সি সফলতার নিশ্চয়তা দেয় না। বরং বাস্তবে দেখা যায় নিজ কাজে দক্ষতা নিয়েও অনেকে ভাল করছেন না। অন্যদিকে সেই বিষয়ে তুলনামুলক কম দক্ষতা নিয়ে অনেকে ভাল করছেন।
সময়সুচি ঠিক করাঃ কোন কাজ কোন সময় করা হবে, কখন শেষ হবে, কোনটা আগে – কোনটা পরে ইত্যাদি ঠিক করার দক্ষতা সময়মত কাজ শেষ করার নিশ্চয়তা দেয়। ঠিকভাবে হিসেব করে অল্প সময়ে বেশি কাজ করা সম্ভব হয়।
ভাল সময় – মন্দ সময়ঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজে ভাল সময় – মন্দ সময় কথাটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এক সময় এত বেশি কাজ পেলেন যে সেগুলি করা কষ্টকর, অন্যসময় আদৌ কোন কাজ পেলেন না। কিছু নিয়ম মেনে এই সমস্যা মোকাবেলা করা গেলেও পুরো সমাধান কারো জানা নেই।
আয় নেইঃ ফ্রিল্যান্সারের আয় সরাসরি নির্দিষ্ট কাজের সাথে সম্পর্কিত। শারীরিক অসুস্থতা থেকে শুরু করে অন্য যে কারনেই হোক, কাজ শেষ না হলে আয়ের সম্ভাবনা নেই। যে কারনে অনেক সময়ই ফ্রিল্যান্সার যখন কাজ থাকে তখন ভবিষ্যতের কথা ভেবে অতিরিক্ত কাজ করেন।
সবসময়ই কোন না কোন কাজ থাকেঃ নিয়মিত চাকরীর ছুটি নির্দিস্ট। দিনের কাজ শেষে ছুটি, সাপ্তাহিক ছুটি, বিশেষ দিনের ছুটি ইত্যাদি নিশ্চিন্তে উপভোগ করা যায়। ফ্রিল্যান্সারের কোন ছুটি নেই। হাতের কাজ শেষ হওয়ার পরও নিজের প্রচার বাড়ানো, কাজের চেষ্টা করা, দক্ষতা বাড়ানো ইত্যাদি কাজ করতে হয়।
এই বিষয়গুলির বাইরে আরো অনেক বিষয় রয়েছে বিষয়ভিত্তিক। কমবেশি সব ফ্রিল্যান্সারকেই সেগুলির মুখোমুখি হতে হয়।